পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২৮৮ জন সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিটিএ জেটি ঘাট থেকে কঠর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের টাগবোটে তুলে দেওয়া হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন জানান, গভীর সাগরে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে অপেক্ষায় থাকা মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ চিন ডুইনে তাদের তুলে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওই জাহাজ বুধবারই বাংলাদেশের জলসীমায় পৌঁছায়। ওই জাহাজে করেই ১৭৩ জন বাংলাদেশি ফিরে এসেছিল যারা বিভিন্নভাবে মিয়ানমারে আটকা পড়েছিলেন বা সাজা পেয়ে জেলখানায় ছিলেন।
মিয়ানমার নৌবাহিনীর ওই জাহাজে করে দেশটির ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও বুধবার দুপুরে কক্সবাজার পৌঁছায়। পরে তারা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়নে বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর তারা মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের যাচাই-বাছাইসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সারেন।
বিজিবি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ১১টি বাসে করে মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাটে নিয়ে আসা হয়। সেখানে আনার পর ইমিগ্রেশন ও ডকুমেন্টেশনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে শুরু হয় হস্তান্তর প্রক্রিয়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও কোস্ট গার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ-মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতিতে দেশটির প্রতিনিধি দলের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়।
এরপর সকাল ৭টার দিকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কর্ণফুলি টাগবোটে তুলে দেওয়া হয়। কোস্ট গার্ডের একটি ট্রলার টাগবোটটিকে পাহারা দিয়ে গভীর সাগরে নিয়ে যায়।
দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে যার আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাতেও। সীমান্তের ওপারের মর্টার শেল ও গুলি এসে এপারে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
ওই সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জনকে প্রথম দফায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফেরত পাঠিয়েছিল সরকার।তাদের মধ্যে মিয়ানমারের বিজিপি ৩০২ জন, তাদের পরিবারের চার সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।
এরপর বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্ত নিয়ে কয়েক দফায় আরও ২৮৮ জন সীমান্তরক্ষী ও সেনা সদস্য এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এবার তাদের ফেরত পাঠানো হল।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, ‘দুর্ঘটনামুক্ত ও নিরাপদ নৌচলাচল ব্যবস্থা নিশ্চিতে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও জনগণের সম্পৃক্ততা খুবই জরুরি।’
আজ সোমবার ‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ধারণক্ষমতার অধিক যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ রোধসহ নৌপরিবহন সংক্রান্ত আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি। যাত্রীসাধারণকে সচেতন ও সতর্ক থেকে নৌপথে চলাচল করতে হবে। আবহমানকাল থেকে বাংলাদেশের মানুষের যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহণের অন্যতম প্রধান মাধ্যম নদী ও নৌযান। অন্যান্য পরিবহণের তুলনায় অধিকতর সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব নৌপরিবহন ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, সরকার দেশের নৌপথ উন্নয়নে বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। নৌপথের নাব্যতা বৃদ্ধি ও অত্যাধুনিক নেভিগেশন প্রযুক্তিসম্পন্ন আধুনিক নৌযান তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া বিদ্যমান গুরুত্বপূর্ণ নদী বন্দরসমূহের আধুনিকীকরণসহ বন্দরের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগও গ্রহণ করেছে সরকার। দেশের নদ-নদীসমূহে যাত্রী ও পণ্যের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিতে নৌযান মালিক, নাবিক ও যাত্রীসাধারণের ভূমিকা ও দায়িত্ব অপরিসীম। তাই নৌচলাচল নিরাপদ ও দূষণমুক্ত রাখতে নৌযান মালিক ও শ্রমিককে সচেতন হতে হবে।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, কালবৈশাখী ও বর্ষা মৌসুমসহ বছরব্যাপী চলাচলরত নৌযানসমূহের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য-‘দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌযান, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে রাখবে অবদান’-প্রাসঙ্গিক ও যথোপযুক্ত হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নের সাফল্যের পথ পরিক্রমায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার-২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি নৌ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পথে দেশকে আরো একধাপ এগিয়ে নিতে সরকারি বেসরকারি সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সকল পক্ষকে কার্যকর অবদান রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘বায়ুদূষণ মানুষের শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’
সাবের হোসেন চৌধুরী আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘সেভ ইয়োর ব্রিদ: পলিসি ডায়ালগ অন ক্লিন এয়ার ইমপারেটিভস’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ জায়গা থেকে দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে। আমরা বিভিন্নভাবে শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণ করছি, যার প্রভাব ফেলছে অন্যজনের স্বাস্থ্যে। বর্তমানে সরকার বিকল্প জ্বালানি ব্যবস্থায় যাওয়ার পরিকল্পনাও করছে। বায়ু ও পরিবেশ দূষণ মোকাবেলায় আইনের যথাযথ প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। বায়ুদূষণ কোনো একটি দেশের সমস্যা নয়, এটি একটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা। তাই এ সমস্যা মোকাবেলায় ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দক্ষিণ এশীয় পর্যায়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সমন্বয় প্রয়োজন। কারণ এক দেশের বায়ুদূষণের প্রভাব পড়ছে অন্য দেশের ওপর। এ ছাড়া, বায়ুদূষণ রোধে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি সব পক্ষের সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি।’
অনুষ্ঠানে ঢাকার বায়ুদূষণের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ক্লাইমেট পার্লামেন্টের আহ্বায়ক ও সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেনটেটিভ স্টেফান লিলার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি আদিল মোহাম্মদ খান, ইউএসএইড এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কাউর এবং শক্তি ফাউন্ডেশনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইমরান আহমেদ প্রমুখ।
একজন সংসদ সদস্যের যদি মৃত্যু হয় তাহলে সেই ক্ষেত্রে ওই আসনের কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে (ইসি) মো. আলমগীর বলেন, ‘সংবিধানের ৬৬ বা ৬৭ অনুচ্ছেদে এ বিষয়ে আমরা কোনো কিছু উল্লেখ দেখি না। মৃত্যুজনিত কারণে সংসদ সদস্য পদ শূন্য হবে এটি আমি এ পর্যন্ত সংবিধানে দেখিনি। সাধারণত এটি ধরে নেওয়া হয় যে, যদি সংসদ সদস্য মৃত্যুবরণ করেন তার পক্ষে তো আর সংসদে আসা সম্ভব নয়। এটি ধরে নিয়েই আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয় এবং আমাদেরকে যখন জানানো হয়, আমরা সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন করি।’
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার কলকাতায় খুন হওয়ার পর শূন্য হয়ে আছে আসনটি। এ ব্যাপারে আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিক বা অপমৃত্যু যাই হোক না কেন এটা হলো সংসদের দায়িত্ব। স্পিকার যখন মৃত্যু সনদ পাবেন তখন সংসদ আসনটি শূন্য ঘোষণা করবেন। শূন্য ঘোষণা করলে গেজেট আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এরপরে আমরা নির্বাচনের ব্যবস্থা করব।’
সংসদ সদস্যের মৃত্যু কারণে আসন শূন্য হবে- এটি সংবিধানে উল্লেখ নেই কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি কেন উল্লেখ করা হয়নি এটি তো আমি বলতে পারব না। সংসদ সচিবকে জিজ্ঞেস করবেন, ওখানে যারা সংসদ সদস্য আছেন, ওনারা বললে বলতে পারেন। সংবিধানে থাকলে ভালো হতো। যেহেতু টানা ৯০ দিন অনুপস্থিত থাকলে স্পিকার সংসদ সদস্য পদ শূন্য ঘোষণা করেন। যদিও সংবিধানে স্পষ্ট করে বলা নেই মৃত্যুজনিত কারণে সংসদ সদস্য পদ শূন্য হবে।’
ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনানের বিষয়ে তিনি বলেন, উনি মারা গেছেন কি, মারা যাননি সেটি তো আমরা জানি না। আমরা অফিসিয়ালি জানি না। এটি সংসদ থেকে গেজেট করে যখন জানাবে তখন আমরা জানতে পারব। উনি মারা গেছেন কি না। সংসদ যদি আসনটি শূন্য ঘোষণা করে তখন আমরা নির্বাচনের ব্যবস্থা করব। সবকিছু স্পষ্ট করে লেখা না থাকলে যে কাজ করা যাবে না তাতো নয়। আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত গেজেট না পাবো, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা নির্বাচন করতে পারব না।’
উল্লেখ্য, গত ১২ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যান এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার। সেদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলকাতায় তার পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করতে যান। পরের দিন, ১৩ মে চিকিৎসক দেখাতে হবে জানিয়ে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন আনার। সন্ধ্যায় ফিরবেন বলেও জানান তিনি। পরে বিধান পার্কের কাছে কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে ট্যাক্সিতে উঠেছিলেন তিনি।
২০ মে এমপি আনারের খোঁজ করতে গিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তার মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে। তারা জানতে পারে, কলকাতায় বন্ধুর বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তার মোবাইলের লোকেশন একবার পাওয়া গিয়েছিল সেখানকার নিউমার্কেট এলাকায়। এরপর ১৭ মে তার ফোন কিছুক্ষণের জন্য সচল ছিল বিহারে। পরে বুধবার (২২ মে) ভারতের এনডিটিভির খবরে বলা হয়, কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেন্সের একটি ফ্লাটে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির পশু নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া, তিনি জনগণের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করার জন্যও পুলিশ নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
সোমবার সকালে পুলিশ সদর দপ্তরের হল অব প্রাইডে পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা, সড়ক, রেলপথ ও নৌ পথের নিরাপত্তা এবং জনগণের নিরাপদ যাতায়াত ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় সভাপতিত্বকালে এ নির্দেশ দেন আইজিপি।
সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম, পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি এবং ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, সভায় মহানগর পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি এবং জেলার পুলিশ সুপাররা অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।
আসন্ন ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা পরিকল্পনা, গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, কোরবানির পশু পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়গুলো সভায় উপস্থাপন করা হয়। আইজিপি ঈদে ঘরমুখো মানুষের গমনাগমন স্বস্তিদায়ক করার জন্য হাইওয়ে পুলিশ এবং জেলা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে সড়ক-মহাসড়কে ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ির চলাচল বন্ধ থাকবে।
পুলিশ প্রধান সড়ক অথবা নৌ পথে কোরবানির পশু পরিবহনের ক্ষেত্রে পশুবাহী গাড়ির সামনে গন্তব্যস্থান উল্লেখ করে ব্যানার লাগানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহবান জানান। আইজিপি কোরবানির পশু পরিবহনে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে নিকটস্থ থানা অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি পশু ব্যাপারীদের অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রদানের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। আইজিপি অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির অপতৎপরতা প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি দুর্ঘটনা এড়াতে পণ্যবাহি গাড়িতে বা ট্রাকে ভ্রমণ না করার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান।
আইজিপি গুরুত্বপূর্ণ ঈদ জামাত কেন্দ্রের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে অনেকে বিনোদন কেন্দ্রে বেড়াতে যাবেন। বিনোদন কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ প্রদান করেন তিনি।
আইজিপি আশা প্রকাশ করে বলেন, সবাই মিলে আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আমরা আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহায় একটি সুন্দর ঈদ উপহার দিতে সক্ষম হবো।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের দেশত্যাগে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকায় যে কোনো জায়গায় যেতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আজ সোমবার এন্টিগা ও নিউইয়র্ক সফর শেষে দেশে ফিরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের দেশত্যাগে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি। তিনি যে কোনো জায়গায় যেতে পারেন। ৬ জুন তিনি দুদকে উপস্থিত হন কি না, সেটা দেখার বিষয়। দুদক এবং সরকার স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করছে বলে আজিজ আহমেদ ও বেনজীরের বিষয়গুলো সামনে আসছে।’
জাতিসংঘে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের নিয়ে জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন নিয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন কোনো তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে হয়নি। ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের শান্তিরক্ষীদের খাটো করার জন্য করা হয়েছে। মাঝেমাঝেই আমাদের দেশবিরোধী প্রতিবেদন করে ডয়চে ভেলে। সেখানে কিছু বাঙালি জড়িত।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের প্রশংসা করেছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব যেখানে প্রশংসা করেছেন, সেখানে ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনের কোনো মূল্য নেই। এই প্রতিবেদন অসাড় ও অন্তঃসারশূন্য।’
মালয়েশিয়ায় শ্রমিকরা যেতে না পারার পেছনে কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে জানিয়ে ড. হাছান বলেন, মালয়েশিয়ায় যাওয়ার তারিখ বর্ধিত করা যায় কি না, সে বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সিঙ্গাপুরে সরকারি সফর শেষ করে দেশে ফিরেছেন সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। গতকাল রোববার তিনি দেশে ফেরেন।
আজ সোমবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সফরকালে সেনাবাহিনী প্রধান সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ শাংরি-লা ডায়ালগ ২১তম এশিয়া সিকিউরিটি সামিট-২০২৪’-এ অংশগ্রহণ করেন।
এ সম্মেলনে এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক নিরাপত্তা ঝুঁকি, সামরিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং ঝুঁকিগুলো মোকাবিলায় যৌথ কর্মপন্থা নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি সেনাবাহিনী প্রধান জার্মানির স্টেট মিনিস্টার অব ডিফেন্স এবং বিভিন্ন দেশ থেকে আগত সেনাবাহিনী প্রধানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
সেনাবাহিনীপ্রধান গত ৩০ মে সরকারি সফরে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন।
আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে অনলাইনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আজ সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।
টিকিট কিনতে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ কোটি ৯০ লাখ বার চেষ্টা (হিট) হয়েছে। এরমধ্যে পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট পেয়েছেন সাড়ে ১৪ হাজার যাত্রী। সে হিসেবে ট্রেনের একটি টিকেটেরে জন্য হিট পড়েছে ১ হাজার ৩০০’র বেশি।
সোমবার দুপুরে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার।
তিনি বলেন, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পশ্চিমাঞ্চলের সাড়ে ১৪ হাজার টিকিট বিক্রি শুরু হয়। টিকিট কিনতে ১ কোটি ৯০ লাখ হিট পড়েছে। দুপুর ২টার পর পূর্বাঞ্চলের টিকিট বিক্রি শুরু হবে। আজ যারা অনলাইনে টিকিট কিনেছেন তারা ১৩ জুন ভ্রমণ করতে পারবেন। এর আগে রোববার থেকে রেলের অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, একজন যাত্রী আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ একবার টিকিট কিনতে পারবেন। সর্বাধিক চারটি আসনের টিকিট কেনা যাবে। এক্ষেত্রে যাত্রীর সর্বোচ্চ এই ৪টি টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহযাত্রীদের নাম ইনপুট দেওয়ার ব্যবস্থা থাকছে। ঈদযাত্রার টিকিট রিফান্ড করা যাবে না। কালোবাজারি প্রতিরোধে প্রতিবার টিকিট ক্রয়ের সময় নিবন্ধনকৃত মোবাইল নম্বরে ওটিপি (OTP) প্রেরণের ব্যবস্থা করা হয়। এবারের ঈদযাত্রায় প্রতিদিন ঢাকা থেকে বহির্গামী ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা হবে ৩৩ হাজার ৫০০টি।
চলতি বছরের মে মাসে দেশে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে ২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন (২২৫ কোটি) ডলার। গত বছরের একই মাসে যেখানে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন (১৭০ কোটি) ডলার। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে দেশে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৫৫ কোটি ডলার বা ৩২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমে বলেন, ‘পরপর দুই মাস দেশে প্রবাসী আয় ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল। এর মধ্যে সর্বশেষ মাসে (মে মাস) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবাসী আয় ৩২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।’
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দাম বৃদ্ধি ও ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালুকে কেন্দ্র করে বৈধপথে প্রবাসী আয় বেড়েছে। তাদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দাম এক লাফে ৭ টাকা বাড়িয়েছে। এ ছাড়া গত ৮ মে ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই পদ্ধতি চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের বিপরীতে টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন করে।
মূলত ক্রলিং পেগ পদ্ধতির আওতায় ডলারের মধ্যবর্তী একটি দাম নির্ধারণ করে ব্যাংকগুলোকে এই দরের আশপাশে স্বাধীনভাবে লেনদেন করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মধ্যবর্তী এই দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। তার আগে ব্যাংক খাতে প্রতি ডলারের বেঁধে দেওয়া দাম ছিল ১১০ টাকা। ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালুর পর এক লাফে প্রতি ডলারের দাম ৭ টাকা বেড়ে যায়। তাই বৈধপথে ডলারের ভালো দাম পাওয়ায় প্রবাসীরা ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় পাঠানো বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মে মাসে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে। তাদের মতে, প্রতিবছরই মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসবকে (ঈদুল আজহা) সামনে রেখে দেশের অভিবাসী কর্মীরা দেশে বেশি অর্থ পাঠান।
এদিকে একক মাস হিসেবে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ে রেকর্ড হয়েছে সদ্য সমাপ্ত মে মাসে। পাশাপাশি পরপর দুই মাস ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে। এর মধ্যে গত এপ্রিলে ২ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার এবং মে মাসে ২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। সে হিসেবে এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে প্রবাসী আয় বেড়েছে ২১ কোটি ডলার বা ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২১ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার। আগের বছরের একই সময়ে এ আয় এসেছিল ১৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার বা ১ হাজার ৯২৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে দেশে প্রবাসী আয় বেড়েছে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার বা ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মী গেছেন ২ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৭ জন। আর ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রবাসে রেকর্ড ১৩ লাখ ৫ হাজার ৪৫৩ জন কর্মী বিভিন্ন দেশে কাজের জন্য গেছেন। কিন্তু সেই অনুপাতে দেশের প্রবাসী আয় বাড়েনি। বর্তমানে সব মিলিয়ে দেশের বিদেশে অবস্থানকারী প্রবাসীর সংখ্যা ১ কোটি ৬৩ লাখ ২ হাজার ৩৬০ জন।
লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে এখনো শৃঙ্খলা ফেরেনি। ক্রেতারা অবশ্য খানিকটা স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছেন সবজির দামে। এর বাইরে মাছ, মাংস, মসলা কিংবা চাল-ডাল কোনো পণ্যের দামেই স্বস্তি মিলছে না। নতুন করে ডলারের দাম বৃদ্ধিও প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে নিত্যপণ্যের দামে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের সবশেষ হিসাব বলছে, সার্বিক মূল্যস্ফীতি এখন ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে প্রায় দশ শতাংশ। যদিও ২০২৩ সালের জুনে ঘোষিত চলতি অর্থবছরের বাজেটে তখনকার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছিলেন, মূল্যস্ফীতি থাকবে ৬ শতাংশের ঘরে। তবে নানা বাস্তবতায় কথা রাখতে পারেননি সাবেক অর্থমন্ত্রী।
বছরের ব্যবধানে পাল্টেছে অনেক কিছুই। নতুন করে অর্থমন্ত্রী হয়েছেন আবুল হাসান মাহমুদ আলী। যার প্রথম বাজেট ঘোষণা চলতি সপ্তাহের শেষ দিন অর্থাৎ ৬ জুন। বাজেটের নানা জটিল হিসাব মেলানোর মধ্যেও যিনি ঠিকই টের পেয়েছেন সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা। তাই তো গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখাই হবে আগামী বাজেটের মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা হবে এই বাজেটের অগ্রাধিকার। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে নিত্যপণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা।’ অর্থাৎ আসন্ন বাজেটে থাকছে মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার নানাবিধ চেষ্টা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার হতে যাচ্ছে ৭ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী এক বছরে সরকার ব্যয় বাড়াতে চায় আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। ব্যয় বাড়ানোর আকাঙ্ক্ষা থাকলেও আয়ের সংস্থান নিয়ে এবারও চাপে থাকবে সরকার। বড় বাজেট, তাই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও থাকছে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরের মাধ্যমে সরকারের আদায়ের লক্ষ্য থাকবে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। বাকিটা মিলবে রাজস্ব বোর্ডবহির্ভূত খাত থেকে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হলেও বড় অঙ্কের ঘাটতি থাকবে আসছে বাজেটে। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি পূরণে সরকার ঋণ নিতে চায় অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ও বৈদিশিক খাত থেকে। তবে এবারই প্রথম সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোনো ঋণ নেবে না সরকার।
সম্প্রতি গণভবনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুতি-বিষয়ক এক বৈঠকে চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরের বাজেটকেও ব্যয় সংকোচনমুখী করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী বাজেটেও যাতে বিলাসী পণ্য আমদানি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলেছেন তিনি। জানা গেছে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে বাজেটে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
অর্থনীতিবিদরাও মনে করছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই তা হবে বাজেটের সবচেয়ে বড় অর্জন। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই সম্ভব। তবে তা শুধু মুখে বললে হবে না, এ জন্য পলিসি পরিবর্তন করতে হবে।’ অবশ্য তিনি সাধুবাদ জানান ডলারের এক্সচেঞ্জ রেট বাজারভিত্তিক করে দেওয়াকে। বলেন, এতে অল্প সময়ের জন্য ডলারের দাম বাড়লেও দীর্ঘ মেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে। তবে আরেক অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ মনে করেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে বেড়ে যাওয়া সুদহার কাজে আসছে না। ‘পৃথিবীর অনেক দেশে এটা কাজে আসলেও বাংলাদেশের জন্য কাজ হচ্ছে না, এখানে বাজার নিয়ন্ত্রণ হয় দুষ্টচক্র দ্বারা, তাদের সবার আগে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে’ যোগ করেন ড. খলীকুজ্জমান।
আসছে বাজেটের প্রতিপাদ্য হতে যাচ্ছে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার’। নানা অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও অর্থমন্ত্রী স্বপ্ন দেখছেন স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের। আর সে জন্য তিনি দেশের অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করতে চান ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপিতে বরাদ্দ থাকছে এ অর্থ। যদিও চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে ব্যয় হয়নি বরাদ্দ দেওয়া এডিপির অর্ধেকটাও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভালো প্রকল্প বাছাই ও ব্যয় করার ক্ষেত্রে আরও দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে সরকারকে। উন্নয়ন প্রকল্প মানেই দেশের জিডিপিতে সরাসরি ভূমিকা রাখা, তাই এ জায়গায় বরাদ্দ কমানো উচিত নয় বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ। দৈনিক বাংলাকে তিনি বলেন, ‘শুধু বরাদ্দ নয় এ জায়গায় বাস্তবায়নে নানা জটিলতা রয়েছে, সময়মতো অর্থছাড় না হওয়া কিংবা যোগসাজশে প্রকল্প নেওয়ার মতো বিষয় রয়েছে। এগুলো থেকে বের হতে হবে। তাহলে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা কমে আসবে।’
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রতিবছরের মতো এবারও রাজস্ব আদায় হবে বাজেটের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের জায়গা। ‘আমাদের রাজস্ব আদায়ে করের হার নেপাল কিংবা পাকিস্তানের চেয়েও কম, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই’ অভিমত দিয়ে ড. খলীকুজ্জমান বলেন, রাজস্ব বাড়াতে যে পরিমাণ সংস্কার প্রয়োজন তা এখনো হয়নি। বাজেট বাস্তবায়নে রাজস্ব সংস্কারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন তিনি। আরেক অর্থনীতিবিদ ড. মনসুর মনে করেন, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হতে পারে ৩ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা, যা এবারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা কম।’ এ অবস্থান থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কীভাবে সম্ভব আমার জানা নেই, তবে বাড়তি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকা মন্দ নয়’ যোগ করেন তিনি।
আগামী বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কমিয়ে আনবে সরকার। চলতি অর্থবছরের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রবৃদ্ধির চেয়ে বেশি নজর দেওয়া উচিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সরকারকে টেনে ধরার জন্য রাষ্ট্রবিরোধী কিছু চক্র ষড়যন্ত্র করছে। সরকারের মধ্যে ঢুকে থেকে তারা ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রবিরোধীরা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য মহাপরিকল্পনা নিয়েছে।
আজ রোববার দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ৮নং ধর্মপুর ইউনিয়নের কালিয়াগঞ্জ এলাকার গোদাবাড়ী গ্রামে কামবালা সড়ক উদ্বোধন ও কামবালা নিবাসের দলিল হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এই দেশের বিরুদ্ধে একের পর এক চক্রান্ত করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হিমালয় তুল্য ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের চেষ্টা করছে তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি যদি নষ্ট করা যায় তাহলে বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দেওয়া যাবে, দেশ আর কখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।
তিনি বলেন, আজ থেকে ৫৪ বছর আগে তরুণ যুবকদের নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। তাই বাংলাদেশ শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, গোটা বিশ্বের নেতৃত্ব দেবে তার দায়িত্ব নিতে হবে তরুণদের।
এ দেশে গণমাধ্যম এখন স্বাধীন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মিডিয়ার ওপর হস্তক্ষেপ করা হয় না। গণমাধ্যমে আজ সবার বক্তব্য প্রচার করা হয়। যে যার মত প্রকাশ করছে, সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন টকশোতে কথা বলতে পারছে। একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল যার কাছে আছে, সে তার নিজের অভিব্যক্তি সবার সামনে প্রকাশ করতে পারছে।
তিনি বলেন, ‘এই এলাকার ভোটার আমাদের মায়ের তুল্য কামবালা যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে আমরা সেই ইতিহাসের পথ ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তারা দেশকে অন্ধকারে তলিয়ে দিয়েছিল। সেই অন্ধকারে তারা আবার দেশকে তলিয়ে দিতে চায়। আপনারা কোনো গুজবে কান দেবেন না। শেখ হাসিনার শরীরে বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহিত, এই রক্ত কখনো পরাজিত হতে জানে না। আগামীতে বাংলাদেশ যুদ্ধজাহাজ তৈরির স্বপ্ন দেখছে। তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত রেল সড়ক স্থাপিত হয়েছে। ১০ হাজার কিলোমিটার নৌ-পথ আমরা তৈরি করেছি।’
দিনাজপুর বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বহ্নিশিখার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ, বিরল পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সবুজার সিদ্দিক সাগর প্রমুখ।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমার্জেন্সি ফায়ার এক্সারসাইজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে ৫০ জন যাত্রীর ডামি ও ক্রুসহ এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
মহড়ায় উড়োজাহাজে আগুন দেওয়ার পর মুহূর্তেই সেখানে বিমানবন্দর ফায়ার শাখার দুইটি অগ্নিনির্বাপক গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, বিমানবাহিনীর অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি, মেডিকেল টিম ও উদ্ধারকর্মীসহ একটি বেল-২১২ মডেলের সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ হেলিকপ্টার এসে উপস্থিত হয়।
এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি অগ্নিনির্বাপক গাড়ি ও একটি অ্যাম্বুলেন্সও সেখানে উপস্থিত ছিল।
পুরো দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গুরুতর আহত একজন ডামি যাত্রীকে হেলিকপ্টারে করে সামরিক হাসপাতালে পাঠানোর ট্রায়াল দেওয়া হয়। দুর্ঘটনায় আহত ১৯ ডামি যাত্রীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং জাহানারা ক্লিনিকে পাঠানোর মহড়ায় দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মুফিদুর রহমান বলেন, ‘এ বছরই বাংলাদেশে আইকাওয়ের অডিট হবে। এই অডিটে আমরা কীভাবে এ ধরনের কার্যক্রমগুলো সম্পাদন করি পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে তারা সেগুলো দেখবেন। এ ছাড়া আমরা এটাকে বাস্তবে কীভাবে করছি, আমরা সঠিকভাবে মহড়া করছি কি না, যারা অংশগ্রহণ করছে তারা কীভাবে অপারেশন করছে ইউনিটের যে বিভাগগুলো আছে সেগুলো তারা প্রত্যক্ষ করবেন। সে জায়গায় আজকের মহড়া খুবই টাইমলি ছিল এবং খুব সুন্দরভাবে এটাকে উপস্থাপন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের প্রতিটি মহড়ায় আমরা আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করি। আমাদের সিস্টেমগুলোকে আমরা রিভিউ করি। এভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ইকোনমিতে এ ধরনের মহড়া ক্যাটালিস্ট ভূমিকা রাখতে পারে। আর সেই ভূমিকাটা পালন করার জন্য আমাদের দক্ষতার প্রয়োজন আছে।’
মহড়ার অন স্ক্রিন কমান্ডার ছিলেন হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আজকের এ মহড়ার উদ্দেশ্য হলো, বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করে বিমানবন্দরে দুর্ঘটনাকবলিত উড়োজাহাজের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যাচাই করা।’
আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (আইকাও) বিধি অনুসারে, প্রতি দুই বছর অন্তর-অন্তর সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ধরনের অগ্নিনির্বাপণ মহড়ার আয়োজন করতে হয়। সেই ধারাবাহিকতায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই মহড়ার আয়োজন করা হলো।
এই মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হলো জরুরি অবস্থায় সব সংস্থার তৎপরতা পরীক্ষা করা, অগ্নিনির্বাপক গাড়িসহ যন্ত্রপাতির উপযোগিতা পরীক্ষা করা এবং জাতীয় পর্যায়ে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় দক্ষতা বৃদ্ধি করা।
আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) বিশেষ স্টিমার সার্ভিস চালু থাকবে।
আগামী ১৩, ১৬ ও ২০ জুন ঢাকা থেকে মোড়েলগঞ্জ এবং ১৪, ১৮ ও ২২ জুন মোড়েলগঞ্জ থেকে ঢাকায় এই বিশেষ স্টিমার চলাচল করবে।
অগ্রিম টিকিটের জন্য যোগাযোগের নম্বরগুলো হলো- ০১৮১৭-১২৫১৮৪ (হেড অফিস) ০১৭১৫-৪০৮০৪২, ০১৮৭৬-০২৫৭৯৯ (সদরঘাট অফিস) এবং ০১৭৩১-৪৪২৫৫৩ (বরিশাল অফিস)।
গত ৩১ মে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদে নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমানকে শোকজ করে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। সেই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রতিমন্ত্রী। আজ রোববার বিকেল ৩টায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি। এ সময় প্রতিমন্ত্রীর আইনজীবী হিসেবে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার সঙ্গে ছিলেন।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার পর ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর বিপক্ষে একটি শোকজ নোটিশ ছিল। যার জবাব দেওয়ার জন্য আমি আইনজীবী হিসেবে এখানে এসেছি। মূলত, একটি ভিডিও এখানে দেখানো হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি (প্রতিমন্ত্রী) তিনজনের জন্য ভোট চেয়েছেন। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ভোট চাওয়ার বিষয়টি দুইবার বলা হয়েছে। এর মানে এটি সুপার এডিট হতে পারে। আর এ বিষয়গুলো চ্যালেঞ্জ করলে সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।’
সুমন আরও বলেন, নির্বাচনের ইমেজ ঠিক রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন যে কাজ করছে এর জন্য প্রতিমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, কোনো কারণে যদি আমার জানার বাইরে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হয়ে থাকে, তার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে আইনের ব্যত্যয় ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হয়নি বলেও দাবি করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ মে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘনের ওই চিঠিতে বলা হয়, পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোট বাইশদিয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া ঘাট এবং চালতাবুনিয়া ইউনিয়নের চালতাবুনিয়া বাজারে ত্রাণ বিতরণের সময় প্রতিমন্ত্রী প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন, যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই কার্যক্রম উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬-এর লঙ্ঘন। সে জন্য আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে কেন দোষী সাব্যস্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে রোববার নির্বাচন কমিশনে (কক্ষ নং-৩১৪, নির্বাচন ভবন, আগারগাঁও, ঢাকা) ব্যক্তিগতভাবে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য চিঠিতে বলা হয়েছিল।